বাবা যুদ্ধ করেননি তবু তিন ছেলের চাকরি মুক্তিযোদ্ধা কোটায়

বাবা মুক্তিযোদ্ধা নন তবু কোটায় চাকরি তিন ছেলের
বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা না হলেও তিন ছেলে চাকরি করেন মুক্তিযোদ্ধা কোটায়। এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনা নিয়ে তোলপাড় ভোলায়।

অভিযোগ উঠেছে, বাবার নামের সঙ্গে মিল থাকায় ভোলার দৌলতখানের এক বীর মুক্তিযোদ্ধার সনদ ব্যবহার করে কোটায় চাকরি করছেন আলী আকবর। তিনি ভোলা উপজেলা ভূমি অফিসে মিসকেস সহকারী পদে রয়েছেন। বাকি দুই ভাই আলী আজগর এবং মিজানুর রহমানও মুক্তিযোদ্ধা সনদে পুলিশে চাকরি করছেন।

জানা গেছে, তিন ভাইয়ের বাবা রুহুল আমিন কাজীর বাবার নাম ছেলামত কাজী। তাদের পৈত্রিক বাড়ি দৌলতখান উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নের ডাকাতিয়া মেগরা এলাকায়। বর্তমানে ভোলা সদরের ভেলুমিয়া এলাকায় থাকছেন তারা। অন্যদিকে চরপাতা ইউনিয়নের চর লামছি মৌজার কাজী রুহুল আমীনের বাবার নাম কাজী রুস্তম আলী। ১৯৬৯-৭০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ছাত্র ছিলেন তিনি।

কাজী রুহুল আমীন মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তার তথ্য চুরি করে ও পিতার নাম বদলে মুক্তিযোদ্ধা হয়ে যান রুহুল আমিন। দীর্ঘ দিন ধরে তিনি ভাতা নিয়েছেন। তিন ছেলেকে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় দিয়েছেন সরকারি চাকরি। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমীনের বেসামরিক গেজেট নং ৬৫৬। লাল মুক্তিবার্তা (৬০৪০৭০০৯০), পরিচিতি
নং-০১০৯০০০১২৮৪। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে সমন্বিত মুক্তিযোদ্ধা তালিকার কোথাও ছেলামত কাজীর ছেলে রুহুল আমিন কাজীকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পাওয়া যায়নি।

ভোলা উপজেলা ভূমি অফিসে কর্মরত আলী আকবরের ২০১৫ সালের ২৮ ডিসেম্বরে প্রকাশিত নিয়োগ আদেশ ও অন্যান্য নথি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে তিনি তার বাবার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাময়িক সনদপত্র জমা দেন। ওই সনদে ছিল কাজী রুহুল আমীন, পিতা মৃত কাজী রোস্তম আলী, গ্রাম চর
লামছিপাতা, রাধাবল্লভ, দৌলতখান, জেলা ভোলা। অথচ তার বাবার জাতীয় পরিচয়পত্র বিশ্লেষণে দেখা যায়, নাম মো. রুহুল আমিন কাজী, জন্ম ২৫ সেপ্টেম্বর ১৯৫৩, পিতার নাম ছেলামত কাজী, মাতার নাম ফিরোজা খাতুন, স্ত্রীর নাম ফরিদা খাতুন। ভোটার এলাকা চন্দ্র প্রসাদ ৪নং ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ভেলুমিয়া, উপজেলা ভোলা সদর।

দৌলতখানের প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন বর্তমানে ঢাকা থাকেন। তিনি ভোলা জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করে প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছেন। জেলা প্রশাসক আরিফুজ্জামান বলেন, ‘বিষয়টি জানা ছিল না। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ সূত্র: দেশ রূপান্তর

Leave a Comment