ওজন কমাতে এবং ত্বকের যত্নে লেবুর উপকারিতার কথা জানেন অনেকেই। সুস্থ জীবনযাপনের জন্য কেউ কেউ সকালে খালি পেটে এক গ্লাস পাকা লেবুর পানি পান করে থাকেন। কিন্তু তা কি আসলেই উপকারী?
অনেকেই দাবি করেন, লেবুপানি হজমে সহায়তা করে, লিভার ডিটক্সিফাই করে, ত্বকের দাগ কমায়, ডিপ্রেশন এবং অ্যাংজাইটি দূর করে, ক্যান্সার দূরে রাখে। মাত্র একটি পানীয় কী আসলেই এতো উপকার করতে পারে? স্বাস্থ্য সচেতন লেখিকা ডিনা গাশম্যান লেবুপানির কার্যকারিতা পরীক্ষা করার জন্য দুই সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন লেবুপানি পান করেন।
ফলাফল হিসেবে তিনি পান ৫টি উপকারিতা-
১) ত্বক উজ্জ্বল করে-
লেবুর রসে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। তা ত্বকে বয়সের ছাপ, কুঞ্চন এবং বলিরেখা ঠেকায়। এ কারণেই অনেক অ্যান্টিএজিং ক্রিম বা সিরামে ভিটামিন সি থাকে। প্রতিদিন লেবুপানি পান করার পর ডিনা দেখেন, ত্বক আগের চেয়ে অনেকটা স্বাস্থ্যোজ্জ্বল হয়ে এসেছে। ত্বকের কিছু দাগ চলে গেছে এবং ত্বকের বিবর্ণ ভাবটাও কেটে গেছে।
২) পেট ফাঁপা কমায়-
লেবুর পানি হজম প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। তা পাকস্থলীর নিজস্ব এসিডের পাশাপাশি কাজ করে খাবারকে ভেঙে ফেলে। শুধু তাই নয়, লেবুপানিতে বেশ কিছুটা পটাশিয়াম থাকে। এ কারণে তা পেট ফাঁপা কমাতে কার্যকরী।
৩) ঠান্ডা-সর্দি কমায়-
হঠাৎ রোদ- হঠাৎ বৃষ্টির এই আবহাওয়ায় অনেকেরই ঠান্ডা লেগে যায়। লেবুতে অনেকটা ভিটামিন সি থাকে বলে তা ঠান্ডা লাগা প্রতিরোধ করতে পারে বলে দাবি করা হয়। আসলেই তা রোগ প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা রাখে কিনা, সে ব্যাপারে শক্ত কোনো প্রমাণ নেই। তবে ডিনা দেখেন, যে দুই সপ্তাহ তিনি লেবুর পানি পান করেছেন, সে সময়ে তার ঠান্ডা লাগেনি, অন্য কোনো অসুস্থতাও দেখা দেয়নি।
৪) ওজন কমায়-
২ সপ্তাহ লেবুপানি পান করার পর ডিনা দেখেন, তার ওজন কমেছে এক পাউন্ড বা আধা কেজি। লেবুপানি এই ওজন ঝরাতে পারে। তিনি এটাও মনে করেন, সকাল সকাল লেবুপানি পান করে দিন শুরু করার কারণে তিনি বাকি দিনটাও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা এবং শরীরচর্চায় উৎসাহ পান। এ কারণেও তার ওজন কমতে পারে।
৫) মন ভালো রাখে-
শারীরিক উপকারিতার পাশাপাশি লেবুর রস মানসিক স্বাস্থ্যও ভালো রাখে বলে অনেকে দাবি করেন। ডিনা জানান, দুই সপ্তাহ লেবুর পানি পান এবং স্বাস্থ্যকর জীবনচর্চার কারণে আসলেই তার মন অনেকটা ফুরফুরে ছিল।
তবে লেবুর রস পানে শরীর ডিটক্স হয় কিনা, এতে লিভারের উপকার হয় কিনা বা ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায় কিনা, এ ব্যাপারে বলাটা এত সহজ নয়। তবে এতে কোনো ক্ষতি হয়নি, তা নিশ্চিত।
কী করে পান করবেন লেবুর পানি?-
অর্ধেকটা পাকা লেবুর রস এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে পান করতে পারেন।
লেবুপানি পান করার পর কুলি করে নিতে পারেন। এতে দাঁত ভালো থাকবে।
লেবুপানির তাপমাত্রা নিয়ে একেক জনের একেক রকম মতামত দেখা যায়। কেউ বলেন ঠান্ডা পানিতে ক্যালরি বেশি ক্ষয় হয়। কেউ বলেন গরম পানিতে মেটাবলিজম দ্রুত হয়। আপনার যে তাপমাত্রায় পান করতে ভালো লাগে, সেটাই পান করুন।
লেবুর রসের পাশাপাশি পানিতে মেশাতে পারেন আদা কুচি, শসা কুচি এবং পুদিনা পাতা। তবে অবশ্যই এতে চিনি মেশাবেন না।