সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) প্রশ্নপত্র ফাঁসকাণ্ডে দেশ জুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। হঠাৎ করেই এই কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হয় সংগীত তারকা তাহসান খানের নাম। নিজের অবস্থান পরিস্কার করে পুরো বিষয়টি নিয়ে দেশ রূপান্তরের সঙ্গে কথা বলেন জনপ্রিয় এই তারকা।
চলমান প্রশ্নপত্র ফাঁসকাণ্ড ইস্যুতে হঠাৎ করে আপনার নাম ছড়িয়ে পড়ে…
তাহসান: যে বিষয়টির সঙ্গে আমার নাম জড়িয়েছে এটা একদমই ভুয়া। বিষয়টা এমন হয়েছে যে কোন তথ্য যাচাই বাছাই না করেই সেটা সব জায়গায় ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে আর মানুষ সেটা বিশ্বাসও করছে।
এও গুঞ্জন ছড়িয়েছে যে, আপনার মা পিএসসির চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে আপনি ২৪তম বিসিএসে অংশ নিয়ে পররাষ্ট্র ক্যাডারে প্রথম হয়েছিলেন এবং পরে ভাইবাতে বাদ পড়েন। এটা নিয়ে আপনার মন্তব্য কি?
তাহসান: দেখুন, আমি আমার জীবনে কখনো বিসিএস দেইনি। পুরো বিষয়টিই ভুয়া। খুব ভালো কর্পোরেট চাকুরি ছেড়ে তার আগেই সংগীত ক্যারিয়ারে প্রবেশ করেছি। তার আগেই আমার লাইফ এসটাব্লিশড। আমার কখনো বিসিএস দেওয়ার প্রয়োজন পড়েনি। আর যেখানে বিসিএস দেইনি সেখানে পররাষ্ট্র ক্যাডারে প্রথম হওয়ার তো প্রশ্নই আসে না।
গুঞ্জন উঠে, প্রশ্নপত্র ফাঁসকাণ্ডে গ্রেপ্তার সৈয়দ আবেদ আলী ছিলেন আপনার মায়ের (সাবেক পিএসসি চেয়ারম্যান ড. জিনাতুন নেসা তাহমিদা বেগম) গাড়ির চালক। এই বিষয়ে আপনার মন্তব্য কি?
তাহসান: এখানে একটা ভুল হচ্ছে। এই ড্রাইভার (আবেদ আলী) অফিসের অন্য ড্রাইভারদের মতোই একজন। আর তিনি কখনোই আমার মায়ের গাড়ি চালক ছিলেন না।
আমি যদি এটা নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে মন্তব্য করতাম তাহলে সবাই আমাকে নিয়েই ব্যস্ত হয়ে পড়বে এবং আসল ইস্যুটা চাপা পড়ে যাবে। প্রশ্নফাঁসের যে বিষয়টি নিয়ে এখন সবাই কথা বলছে এবং এর সঙ্গে কারা জড়িত সেসব নিয়ে যে কথাগুলো হচ্ছে সেটা ঘুরে আমার দিকে চলে আসবে। এটাই হয়তো কিছু মানুষ চেয়েছে। খুঁজে বের করা দরকার এগুলো আসলে কারা করছে।
দিনভর এই বিষয়টি নিয়ে নানা সমালোচনা চলতে থাকে। যখন বিষয়টা দেখতে পেলেন তখনই সঙ্গে সঙ্গে আপনার অবস্থান পরিষ্কার করেন নি কেন?
তাহসান: আমি যতক্ষণে বিষয়টা জানতে পেরেছি ততক্ষণে অনেকেই সেটা শেয়ার দিয়ে ভাইরাল করেছেন। এটা একটা অসহিষ্ণু ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে। ততক্ষণ পর্যন্ত আমাকে কেউ কিছু জিজ্ঞেস করেনি। জিজ্ঞেস করলেই কিন্তু আমি বলে দিতাম যে, আমি কখনো বিসিএস দেইনি।
আমি যদি এটা নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে মন্তব্য করতাম তাহলে সবাই আমাকে নিয়েই ব্যস্ত হয়ে পড়বে এবং আসল ইস্যুটা চাপা পড়ে যাবে। প্রশ্নফাঁসের যে বিষয়টি নিয়ে এখন সবাই কথা বলছে এবং এর সঙ্গে কারা জড়িত সেসব নিয়ে যে কথাগুলো হচ্ছে সেটা ঘুরে আমার দিকে চলে আসবে। এটাই হয়তো কিছু মানুষ চেয়েছে। খুঁজে বের করা দরকার এগুলো আসলে কারা করছে। সাংবাদিকদের উচিত এগুলো নিয়ে তদন্ত করা, রিপোর্ট করা।
তিনি আমার মায়ের ড্রাইভার নন: তাহসানতিনি আমার মায়ের ড্রাইভার নন: তাহসান
দেশ রূপান্তর: গুঞ্জনের বিপরীতে আপনার শুভাকাঙ্ক্ষীদের অবস্থান…
তাহসান: যারা আমাকে ভালোবাসেন, আমার ভক্তশ্রোতা তারা অনেকেই এর প্রতিবাদ করেছেন। তাদের জন্যই আমি আজকের তাহসান। তারাই আমাকে আমার সম্মানের জায়গা করে দিয়েছে। যারা আমাকে ভালোবাসেন না তারা হয়তো শেয়ার করে বিষয়টা ভাইরাল করেছেন। পরে ভুল বুঝতে পেরে সেটা আবার ডিলিট করেছেন।
তারকা বলেই কি এসব?
তাহসান: সব দেশের সব সময়ই সেলিব্রিটিদের খ্যাতির বিড়ম্বনা মাথায় রেখে কাজ করতে হয়। এখন সোশ্যাল মিডিয়া সন্ত্রাসের যুগে বিড়ম্বনাটা একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে। আশা করি মানুষ একটু ধৈর্য্য নিয়ে চিন্তা করে নেগেটিভ কিছু শেয়ার করবেন যেন মানুষের অনেক বছরের অর্জনকে অপবাদ দিয়ে নষ্ট করার চেষ্টাটা অজান্তেই কেউ না করেন। না জেনে কারো অনেক বছরের অর্জন নষ্ট করবেন না। (সাক্ষাৎকার টি দেশ রূপান্তর থেকে নেওয়া)