পুরস্কারের আশায় জীবিত রাসেলস ভাইপার নিয়ে প্রেসক্লাবে কৃষক রেজাউল

জীবিত রাসেলস ভাইপার সাপ ধরে নিয়ে যেতে পারলে পুরস্কার পাবেন, এই আশায় একটি রাসেলস ভাইপার সাপের বাচ্চা ধরেছেন রেজাউল নামে এক যুবক। শুধু ধরেনই নাই, সাপটি নিয়ে তিনি চলে আসেন ফরিদপুর প্রেসক্লাবে।

শনিবার (২২ জুন) রাতে রেজাউল সাপটি নিয়ে প্রেসক্লাবে আসেন। রেজাউলের বাড়ি শহরতলীর আলিয়াবাদ ইউনিয়নের কাদেরের বাজার এলাকায়। রেজাউল পেশায় কৃষক হলেও বর্ষা মৌসুমে মাছ ধরার কাজও করেন।

রেজাউল জানান, দুই দিন আগেও তিনি একটি রাসেলস ভাইপার সাপ মেরেছেন। আজকে বিকালে মাছ ধরতে গিয়ে এই সাপটি দেখতে পান। পরে তোয়ালে দিয়ে পেচিয়ে সাপটিকে ধরে ফেলেন।

এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রেজাউল জানান, স্থানীয় মুরব্বীদের কাছে জেনেছেন, জীবিত রাসেলস ভাইপার সাপ ধরতে পারলে ফরিদপুরের নেতারা পুরস্কার দিবেন। সে জন্যই মূলত জীবিত ধরেছেন। সাপ বাচ্চা হোক আর বয়স্ক হোক বিষ কিন্তু একই থাকে, সেটা জানেন কি না এমন প্রশ্ন করলে রেজাউল বলেন, তোয়ালে দিয়ে পেঁচিয়ে নিয়েছিলাম তো।

জানা গেছে, গত ২০ জুন জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি মিটিং এ রাসেলস ভাইপার সাপ নিয়ে আলোচনা হলে, জেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফ রাসেলস ভাইপার সাপ মারতে পারলে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেন। সেই ভিডিও ভাইরাল হলে একদিন পরেই সেই অবস্থান থেকে সরে আসেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। পরদিন ২১ জুন এক সংশোধনী বিজ্ঞপ্তি দেন, সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, রাসেলস ভাইপারের উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে কেউ যদি রাসেলস ভাইপার সাপ জীবিত ধরতে পারেন তাহলে তাকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। আগের বক্তব্যটি ভুল বুঝাবুঝি কারণে বিকৃত করে প্রকাশ হয়েছে বলেও ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

ফরিদপুর পৌরসভার ২৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ আওয়াল হোসেন বলেন, সাপ ধরার বিষয়টি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি সাপটি বন বিভাগে জমা দিয়ে প্রাপ্তিস্বীকারপত্র নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে যেতে বলেছেন।

ফরিদপুরের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা গোলাম কুদ্দুস ভূঁইয়া বলেন, সরীসৃপজাতীয় প্রাণী ধরার কোনো বিধান নেই। ধরাটাই অপরাধ। কারও জালে আটকে গেলে সে অন্য কথা। আমি প্রাপ্তিস্বীকারপত্র দিতে পারি না। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অন্তত তিনজন পুরস্কারের আশায় বন বিভাগে এক হাত লম্বা দৈর্ঘ্যের বাচ্চা রাসেলস ভাইপার জমা দেওয়া চেষ্টা করছে। এ নিয়ে আমরা বিপদে পড়েছি।

Leave a Comment