তদন্ত-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এই হ’ত্যা’কা’ণ্ডে তিনটি প্রশ্নের উত্তর জানা তাঁদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এক. এ হ’ত্যা’কা’ণ্ড পরিকল্পিত, নাকি তাৎক্ষণিকভাবে ঘটেছে। দুই. কার নির্দেশে সিনহাকে গু’লি করেছিলেন লিয়াকত। তিন. ঘটনার সময় আদৌ সিনহার হাতে অ’স্ত্র ছিল কি না।
মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হ’ত্যা মা’ম’লায় তিনটি মৌলিক প্রশ্নের জবাব খুঁজছেন তদন্তকারীরা। তাঁরা বলছেন, এই তিনটি প্রশ্নের জবাব মিললেই ঘটনার সবকিছু স্পষ্ট হবে। সিনহা হ’ত্যা মা’মলা’য় সাক্ষী হিসেবে শিপ্রা দেবনাথ আজ শনিবার আদালতে সাক্ষ্য দিতে পারেন বলে জানা গেছে।
এদিকে হ’ত্যা’কা’ণ্ডের ১৪ দিনের মাথায় মা’ম’লার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়েছে। নতুন করে তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার খায়রুল ইসলাম।
তদন্তকারীদের সূত্রে জানা যায়, টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ কক্সবাজারের পুলিশ সুপারকে ফোন করে বলেছিলেন, তিনি সিনহাকে গু’লি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু গু’লি করার আগে লিয়াকত ওসি না অন্য কারও কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছিলেন, সে ব্যাপারে আরও সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহের চেষ্টা করছে তদন্তকারী দল।
সিনহার সঙ্গী সাহেদুল ইসলাম সিফাত পুলিশকে বলেছেন, গাড়ি থেকে নামার সময় সিনহার অ’স্ত্র হাতে ছিল কি না, তা তিনি দেখেননি। আর পুলিশের করা মা’ম’লায় বলা হয়েছে, গাড়ি থেকে নেমে কোমরের ডান পাশ থেকে পি’স্ত’ল বের করে গু’লি করতে উদ্যত হন সিনহা।র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, আরও তদন্তে সবকিছু পরিষ্কার হবে।
সিনহা হ’ত্যা মা’ম’লার তদন্তকারী কর্মকর্তা গতকাল পরিবর্তন শুক্রবার হয়েছে। জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার খায়রুল ইসলাম তদন্তের দায়িত্বভার পেয়েছেন। এর আগে মামলাটি তদন্ত করছিলেন সহকারী পুলিশ সুপার জামিলুল হক।
তদন্তকারী কর্মকর্তা বদল প্রসঙ্গে জানতে চাইলে র্যাবের মুখপাত্র আশিক বিল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, তদন্তকারী কর্মকর্তা যেকোনো সময় পরিবর্তন হতে পারেন। এটা খুবই স্বাভাবিক একটা প্রক্রিয়া।
অন্যদিকে সিনহা হ’ত্যা মা’মলা’র আসামি চার পুলিশসহ সাতজনকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে র্যাব। গতকাল সকাল ১০টার দিকে র্যাবের একটি গাড়ি কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে সাত আ’সামি’তে নিয়ে যায়। আ’সা’মি’রা হলেন কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া এবং পুলিশের মামলার তিন সাক্ষী টেকনাফের মারিশবুনিয়া গ্রামের মো. আইয়াস, নুরুল আমিন ও নাজিম উদ্দিন।
গত বুধবার কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এই সাত আ’সা’মিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিন করে রিমা’ন্ড মঞ্জুর করেন।জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক মোকাম্মেল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, র্যাবের একটি গাড়ি এসে চার পুলিশসহ সিনহা হ’ত্যা মা’মলা’র সাত আ’সামি’কে কা’রা’গার থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায়। একই মামলার প্রধান তিন আসামি টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া পুলিশ ফাঁ’ড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও থানার এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত কারাগারে আছেন।
সিনহা হ’ত্যা ঘটনায় সত্য উদ্ঘাটনে গণশুনানির ডাক দিয়েছে তদন্ত কমিটি। কাল ১৬ আগস্ট সকাল ১০টায় এই গণশুনানি হবে টেকনাফের শামলাপুর রোহিঙ্গা ক্যাম্প ইনচার্জের কার্যালয়ে।
গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের মারিশবুনিয়া পাহাড়ে ভিডিও চিত্র ধারণ করে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে ফেরার পথে শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গু’লি’তে নি’হ’ত হন সিনহা।