কাল বাদ পরশু 41 তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা, বাংলাদেশের সবচেয়ে কম্পিটিটিভ এবং সবচেয়ে বড় চাকরী পরীক্ষা যজ্ঞ। প্রায় সাড়ে তিন লাখ অংশগ্রহণকারীর মধ্যে কেবল দশ হাজারের মত টিকবে।
আগের চারবার টানা অংশগ্রহণ করেছি বলেই জানি এই সময়টাতে একজন অংশ গ্রহণকারীর মানসিক অবস্থা কেমন থাকে। অনেক পাওয়া না পাওয়ার হিসেব, এইবার প্রিলি পাস করলে রিটেনে আর অবহেলা করব না বা যাদের বয়স শেষ, আল্লাহ লাস্ট একটা সুযোগ চাই কিংবা যারা সংসার করছেন, সংসারের ঝক্কি ঝামেলা সামলিয়ে এবার যদি পেরে না উঠেন আর হয়ত দেয়া হবেনা জীবনের সবচেয় কাং্খিত পরীক্ষা। বেকারত্বের গ্লানি নিয়ে যারা বন্ধু বান্ধব পরিবার পরিজনদের কাছ থেকে কিছুটা দুরেই ছিলেন গত কয়েক বছর তাদের জন্য বা যারা জীবনের প্রথম পরীক্ষায় বাজিমাত করবেন সবার জন্যই হিসেব নিকেশ মেলানোর দিন আগামি শুক্রবার। সব সময়ের মত বিশ্বাস করি দুই ঘন্টার এমসিকিও মেধাবীদের খুজে বের করার কোন পারফেক্ট ম্যাথড না।
গত চার বিসিএসের ব্যক্তিগত কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি :
১. প্রেসারমুক্ত থাকুন। কারন বিসিএসে শুধু প্রিপারেশনে দিয়ে পাস করা যায়না।
২. বৃহস্পতিবার থেকে পড়াশোনা বিষয়ল আলাপ না করে অন্য বিষয়ে আড্ডা দেন তাতে প্রেসার রিলিজ হবে।
৩.কমন না পরলেও আপনি কিভাবে পরীক্ষাটা শেষ করে আসলেন সেটাও কিন্তু গুরুত্ব পূরণ।
৪. এই দুই দিন অতি পন্ডিতদের থেকে দূরে থাকুন,যারা খাবার ক্যান্টিনে বা লাইব্রেরির সামনে সৈয়দ শামসুল হকের কোন অপরিচিত বইয়ের নাম জিজ্ঞেস করে আপনাকে কনফিউজড করে দেয়।
৫. সাধারন জ্ঞান পড়া একেবারে বাদ দেন, সাম্প্রতিক বড়জোর গত দুই মাসের কারেন্ট এফিয়ারস এক বারের জন্য চোখ বুলিয়ে যান।
৬. বিজ্ঞান আর কম্পিউটার একটু দেখতে পারেন কারন এগুলো কমন পরবে।
৭. যারা ম্যাথ ভাল পারেন ম্যাথ করার দরকার নাই, যারা ভাল পারেন না তাদেরও দরকার নাই। কারন এই সময়ে ম্যাথ করেল আপনার কনফিডেন্স লো হতে পারে।
৮. যা এত দিনে পারেননি তা আগামি দুই দিনেও পারবেন না, সো এসব বাদ দিন। এসব যে পপরীক্ষায় আসবে তার নিশ্চয়তা কি?
৯. বাংলা এবং ইংলিশ লিটারেচার, ম্যাথ,বিজ্ঞান, কম্পিটারের গত বিসিএসের প্রশ্নগুলোতে চোখ বুলাতে পারেন কারন এসব প্রশ্ন রিপিট হবেই।
১০. যেহেতু দুই ঘন্টা পরীক্ষা সুতরাং একটা ভাল ঘুম পরিক্ষার জন্য খুবি গুরুত্বপূর্ণ। অন্তত বৃহস্পতিবারটা একটু ভাল ঘুমিয়ে নেন।
১১. এমন অনেকেই আছেন যারা একেবারে না পড়েই টিকে যাবেন, আবার ভাল প্রিপারেশন নিয়েও অনেকে বাদ পরে যাবেন। বিসিএসে এমনটাই হয়ে আসছে। সুতরাং কিছুটা ভাগ্যের ছুয়াতো লাগবেই।
কপালে যা আছে তা হবেই, তাই বলেতো চেষ্টা করা দূষের কিছু না। সবার জন্য শুভ কামনা।
লিখেছেনঃ
লিংকন
সুপারিশপ্রাপ্ত পুলিশ ক্যাডার(এএসপি), ৩৬ তম বিসিএস ।
বি.দ্রঃ বিসিএস নিয়ে নিয়মিত আপডেট পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে সাথে থাকুন ।
ধন্যবাদ ।