জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মোঃ আল আমিন ৩৭তম বিসিএস সমবায় ক্যাডারে প্রথম হয়েছেন।লিখেছেন— এম এম মুজাহিদ উদ্দীন সাহিত্যে ছিল বসবাস শৈশব থেকেই সাহিত্যের প্রতি ভালোবাসা। স্কুল থেকে দিনশেষে যখন বাড়িতে ফিরতেন তখন সাহিত্যের বইয়ের মধ্যে ডুবে থাকতেন। একজন সাধারণ ব্যবসায়ী পিতা ইদ্রিস ব্যাপারী ও গৃহিণী মা আমিনা বেগমের ঘরেই তার জন্ম। ৭ ভাই বোনের মধ্যে সবার ছোট। সাফা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণিতে পেয়েছেন
সরকারি বৃত্তি। একই স্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে জিপিএ-৪.৮১ পেয়ে স্কুলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ফলাফল করেন। তারপর আহসানিয়া মিশন কলেজ থেকে জিপিএ-৪.৫০ পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের গন্ডি পেরোন। ইচ্ছা ছিল অভিনেতা হওয়ার উচ্চ মাধ্যমিকের পর বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পান। ঢাকায় থাকার ইচ্ছা সে কারণে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে ভর্তি হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে।
আল আমিনের পরিবারের অবস্থা বেশি ভালো ছিল না। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর টিউশনি করে নিজের খরচ নিজে চালাতেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের দিনগুলো পড়াশোনা, খেলাধুলা, টিউশনি আর মঞ্চ নাটক করেই কাটিয়েছেন। অভিনেতা হওয়ার ইচ্ছা ছিল তাই মঞ্চ নাটক করতেন; কিন্তু সময়ের প্রয়োজনে অভিনেতা হওয়ার স্বপ্নকে মুছে ফেলেন। উপহাস থেকে ভালো কিছু বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষ করার পর এক বন্ধুর পরামর্শে বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। সেই থেকেই প্রস্তুতি শুরু।
শুরুতে বিগত সালের প্রশ্নগুলো বিশ্লেষণ করেছিলেন। ফলে কোনগুলো বাদ দিতে হবে আর কী পড়ার দরকার তা ভালোভাবেই বুঝে গিয়েছিলেন। নিয়মিত পত্রিকার গুরু্নত্বপূর্ণ পাতাগুলো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়তেন। পড়ালেখা খুব মনযোগ সহকারে পড়তেন। খাতায় লিখে রাখতেন গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্যগুলো। প্রস্তুতির এক পর্যায়ে একটা প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরি পেলেন; কিন্তু তার স্বপ্ন যে বিসিএস! তাই সে চাকরিতে আর যোগদান করেননি। ব্যাংকের চাকরিতে যোগদান না করায় আর দীর্ঘ সময় বেকার থাকার
কারণে অনেক মানুষ বিভিন্ন কটূ কথা বলতো। সেসব কথার জবাব মুখে দেননি। আজ আল আমিনের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। এখন কটূ কথা আর কেউ বলে না। স্বপ্ন যাদের বিসিএস যারা বিসিএস ক্যাডার হতে চায় তাদের উদ্দেশে আল আমিন পরামর্শে দিয়ে বলেন, গণিত ও ইংলিশের উপর বিশেষ জোর দিন। নিজের দুর্বল পয়েন্টগুলো খুঁজে বের করুন। সেসব বিষয়ে সময় দিন, নিজেকে জানুন। নিয়মিত দৈনিক পত্রিকা পড়ে নিজেকে আপডেট রাখুন। যা পড়বেন গুছিয়ে ও মনযোগ দিয়ে।