সরকার ২৬ হাজার ১৯৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ লক্ষ ৪ হাজার ৭৭২ জন শিক্ষকের চাকরি জাতীয়করণ করেছিল। এদের মধ্যে প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষক চাকরিবিধি অনুযায়ী এখনো একাডেমিক ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণমূলক কাম্য যোগ্যতা অর্জন করতে সক্ষম হননি।
জাতীয়করণ করার পরে সেই শিক্ষকদের ৩ বছর সময় দেয়া হলেও অনেকেই সেই যোগ্যতা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। তাই সেই অযোগ্য শিক্ষকদের তালিকা তৈরি করেছেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর । প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এ তালিকা পাঠানো হবে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে আগের বিধিমালা অনুযায়ী জাতীয়করণ হওয়া নারী শিক্ষকদের ক্ষেত্রে এইচএসসি পাস ও সিইনএড কোর্স এবং পুরুষদের ক্ষেত্রে ডিগ্রি বা সমমান পাস ও সিইনএড কোর্স করতে বলা হয়।
এজন্য তাদের জাতীয়করণের পর যোগ্যতা অর্জনে সময় বেঁধে দেয়া হয় ৩ বছর। কিন্তু এ সময় পেরিয়ে আরও ১ বছর পার হয়ে গেলেও এখনও জাতীয়করণ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ২ হাজার ৪৯৬ জন শিক্ষক নিজেদের যোগ্যতা অর্জন করতে পারেননি। যোগ্যতা অর্জন করতে না পারলেও তারা নিয়মিত সরকারি বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন ।
তবে যোগ্যতা অর্জনে ব্যর্থ শিক্ষকদের অধিকাংশরাই সরকারি চাকরির শেষ সময়ে চলে এসেছেন কারণ তাদের অনেকের বয়স ৫০ থেকে ৫৫ বছর বয়স হয়ে গেছে। তাই বর্তমানে উনারা অবসরে যাওয়ার পথে।
এদের বাইরে ৩৫ থেকে ৪৫ বছরের বেশকিছু শিক্ষক রয়েছেন, যারা এসএসসি বা এইচএসসি পাস করে বেসরকারি স্কুলে চাকরি শুরু করেন। পরে জাতীয়করণ হলেও তারা আর সে পদের জন্য যোগ্যতা অর্জন করতে পারেননি।
যোগ্যতা অর্জনে শিক্ষকদের দেয়া নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। এসকল শিক্ষকদের তালিকা সংগ্রহ করা হয়েছে।
যারা অবসরে যাওয়ার পথে, তাদেরকে অবসরে পাঠানো হতে পারে,বাকিদের নতুন করে আরও সময় বাড়িয়ে দেয়া হতে পারে। তারপরও যদি ব্যর্থ হন, তবে তাদের চাকরিচ্যুত করা হতে পারে।
যেহেতু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে এসব বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়েছে তাই মন্ত্রণালয় থেকে এই তালিকা মন্ত্রিপরিষদে পাঠানো হবে। সেখানে যে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে সে সিদ্ধান্ত ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা হবে।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জনাব এ এম মনসুর আলম এ বিষয়ে বলেন, জাতীয়করণ হওয়া যেসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের অ্যাকাডেমিক ও প্রশিক্ষণের সনদ নেই, তাদের তালিকা সংগ্রহ করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
যোগ্যতা অর্জনে নির্ধারিত সময় পার হলে গেলেও, কেউ কেউ তা থেকে এখনো পিছিয়ে রয়েছেন। তাদেরকে চিহ্নিত করা হচ্ছে। মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে সময় বৃদ্ধি বা চাকরিচ্যুত করার যে সিদ্ধান্ত আসবে আমরা তা বাস্তবায়ন করবো।